কবিতা-ওয়ালিনা ওভির ৩টি কবিতা

প্রথম দেখা

ওয়ালিনা ওভি


বাতাসের অনামিকা ছুঁয়ে দুলে যায় একলা মনে নিসর্গের ঝুমকা,
কথাকলির কণ্ঠে তখন রাগ ভৈরবী,
গালে হাত দিয়ে বসে শোনে লজ্জাবতী
তোমার লাজুক চোখের পাপড়ির মতো নুইয়ে পড়ে সহসাই,
আর আমি নয়নতারা হয়ে লাজের মাথা খেয়ে তাকিয়ে থাকি অপলক
স্রষ্টার অপার্থিব রুপে অর্থহীন হয়ে যায় জাগতিক বাসনা
প্রকৃতি তার বুকের খাঁজে লুকিয়ে রাখে পুরো পৃথিবীর বিস্ময়,
সেখানেই প্রথম দেখা তোমার আমারএরপর আর থেমে থাকেনি,
এভাবেই সময়ের বক্ষবন্ধনীতে বাঁধা পড়ে যায় অবলীলায়
প্রকৃতির যুগল প্রেমের একান্ত কাহিনী




মেরামত

ওয়ালিনা ওভি


তোমার ক্ষত হৃদয়টা একবার আমাকে দাও,
আমি আর একবার মায়াবতী হবো,
যাতনার বিষে আবার নীল হবো,
নীলকণ্ঠ হবো।
পুন :মুদ্রণে শুধু আদরগুলো বসিয়ে দেব তোমার বিষাদ প্রচ্ছদে,
গভীর রাতে পিকাসো হবো,
এঁকে যাবো একের পর এক আলিঙ্গনাবদ্ধ ছবি
স্মৃতির এ্যালবাম থেকে বেছে নিয়ে সুখের মূহুর্ত,
আলতো হাতে সাজিয়ে দেবো অনাগত সময়ের পসরায়
একবার বেড়িয়ে এসো,
ছুঁড়ে ফেলো স্ববিন্যাশের মুখোশ
তীব্র আলোতে যদি সংকুচিত হয় প্রিয়তম আইরিস,
আমি তোমার রোদ চশমা হবো
ঝড় আসুক, এক লহমায় কানামাছি খেলে
তোমাকে লুকাবো নিবিড় পাখনায়!
উড়ে চলে যাবো আমি এক গতিমান ভালবাসা পাখি,
ভালবাসার সব ক্ষুদ্র বলয় পেরিয়ে বৃহত্তর অসুখে




ঠিকানাবিহীন

ওয়ালিনা ওভি


এক অদ্ভুত সারল্য মিশে আছে চোখের গভীরতায়,
ঠোঁটের কোনে জমাট বাঁধা অমীমাংসিত রহস্য
নিকোটিনের সাদা ধোঁয়ার মতো ভেতরে সেঁধিয়ে যায় সুখ সুখ মৃত্যু
এক অপার্থিব মোহ, আচ্ছন্ন করে রাখে তনু মন,
নিবিষ্ট মনে লিখে যাই স্বপ্নের সাতকাহন
অমরাবতীর পাড় ছুঁয়ে দেখার অনন্ত অভিলাস,
আর এখন সামনে রহস্যময়ী কুহেলিকা
ডুবে যাবো একটা চোরাবালি চাই,
না হয় একটা সম্মোহনী চোখ!
আমার তাতেই চলে যাবে
কুসুমাবত আকাশে স্বপ্নময়তার ছবি,
আর আমি কচুরীপানার মতো ভেসে চলেছি

ইচ্ছে করেই ঠিকানা হারিয়েছি,
ফিরে যেতে চাইনা তাই

কবিতা-দুর্জয় বৈদ্য

অস্কারের দাবিদার

দুর্জয় বৈদ্য


অন্ধ চোখের সামনে তুমি ফ্লাডলাইট জ্বালাও ,
আর এরপর এসে দাঁড়াও খুব আশেপাশের কোথাও । 
স্থবির জীবনের একমাত্র সজাগ থাকা বাঁ-পাশটাঃ
যেটা তোমার কাছে বন্ধক দেয়া ;
সেটাতে সমুদ্র এসে চোখ টিপ মারে ।
আকাশ আমাকে দেখে করুণা করে 
আর চাঁদ ফেরত দিয়ে যায় অমাবস্যার আলো ।
আমি তখন আর বাঁচি না ,
কেবল বেঁচে থাকার অভিনয়ে অস্কারের দাবিদার হয়ে উঠি 





পথ শেষে

দুর্জয় বৈদ্য


কখনো হারানো রোদের বিকেলগুলোর মতো মুহূর্তের সাথি হয়ে ,
আবার কখনো টুকরো করা মেঘেদের দাসত্বের মতো ।
কখনো মোমের আলোয় ভাঁজ করা রাতের সাথে --
যে রাতে আলোর অনুপ্রবেশ সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষিত ;
আবার কখনো সাদা তুষারের সাথে দায়বদ্ধতা দেখাতে ,
বাঁকের পর বাঁক ঘুরতে থাকি আমি ।
অবিরাম , অবিশ্রান্ত । 
দিনের শেষে এসে টোকা দিই সেই চেনা দরজায় ,
হাজার পথের ক্লান্ত পথিকের যে সেটাই একমাত্র বন্দর ।

কবিতা-মেঘলা আকাশ

স্বরলিপি

মেঘলা আকাশ


মায়াবী চাঁদনী রাতের রুপালী আলোয়
ভেসে আসে এক অচেনা সুর
মুগ্ধ হরিনী চোখে চেয়ে থাকা
অভিমানী ভালোবাসা দিয়ে এই স্বরলিপি গাঁথা |

হ্রদয়ের সব অনুভূতি গুলো
ছন্দে ছন্দে কল্পনায় ঘুরে বেড়ায়
র্নিঘুম রাতে ভেবে দিশেহারা
মুগ্ধ হরিনী চোখে চেয়ে থাকা
অভিমানী ভালোবাসা দিয়ে এই স্বরলিপি গাঁথা |

আমার দুই আঁখি কল্পনায় যায় হারিয়ে
সজল ধারায় ওই জোছনাময় চারদিকে
যার মায়াজালে বিভোর হয়ে
নিজেকে বিলিয়ে দিব সকল বাধা ভুলে |

মায়াবী চাঁদনী রাতের রুপালী আলোয়
র্নিঘুম রাত ভেবে দিশেহারা
মুগ্ধ হরিনী চোখে চেয়ে থাকা
অভিমানী ভালোবাসা দিয়ে এই স্বরলিপি গাঁথা||