একটি ধূসর পথ ও তার ছুটে চলা
সিরাজুম মুহসিনা সিলভিয়া
রাজিয়া আজ খুব খুশি। আজ সে একা একা রাস্তা
পার হতে পেরেছে। যে কেউ নতুন কিছু করতে পারলে খুশি হয়। রাজিয়া তো খুব সাধারণ মেয়ে ,সে তো
খুশি হবেই। নতুন পরিবেশে সব কিছু মানিয়ে নিতে কষ্ট হওয়ারই কথা। কিন্তু রাজিয়ার
কষ্ট হয়না। একটা কালো ব্যাগ জাপটে ধরে রাজিয়া যাচ্ছে। কলা পাতা রঙের থ্রি পিসে এই
সুন্দর সকালে ওকে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে প্রকৃতির সাথে মিলে মিশে একাকার।
কিন্তু রাজিয়ার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। সুন্দর লাগাতে রাজিয়ার কোন যায় আসে না। এই
অসহ্য সুন্দর রূপ দেখার সৌভাগ্য তার কখনোই হয়নি। সে এখন কোচিং এ ঢুকতে ব্যস্ত।
সামি আপু কোচিং এ ভর্তি করানোর সময় কোথায় কোচিং সব চিনিয়ে দিয়ে গিয়েছে। হোস্টেল
থেকে রাস্তা পার হয়েই বরাবর বিল্ডিংটার চার তলায় উঠে যেতে হবে। তারপর ডান দিকের
রুমটায় কোচিং। সামি আপু বলেছিল প্রথম দিন দিয়ে যাবে। কিন্তু রাজিয়া রাজি হয়নি।
কারো সাহায্য নিতে রাজিয়ার ভালো লাগেনা। তবুও হয়তো সাহায্য নিয়েই বড় হতে হবে। রাজিয়া গুনে গুনে পার
হচ্ছে এক সাথে বারটা সিঁড়ি। সে প্রতিটা প্রহর গুনে গুনে অপেক্ষা করতে জীবনের
লক্ষের দিকে এগুচ্ছে সেই ছোট থেকে। আরও দুই তলা; মানে
আটচল্লিশটা সিঁড়ি পার হতে হবে। হোঁচট খেতে খেতে নিজেকে সামলায় রাজিয়া। এই নিয়ে আট
বার হোঁচট খেল। এখনও আরও পাঁচটা সিঁড়ি বাকি। রাজিয়া জানে জীবনে সব হোঁচট খেয়েই শিখতে হয়। কিন্তু সে
কিছুতেই ভার্সিটি এডমিশন টেস্টে হোঁচট খেতে চায়না। ও এক লাফে ঢাবির কোন একটা
সাবজেক্টে ভর্তি হতে চায়। ঢাবির এক কিনারে ওর জায়গা পেলেই হবে। ''আরে দেখে
চলতে পারেন না! অন্ধ নাকি!" হঠাৎ এক নিষ্ঠুর কর্কশ কণ্ঠে রাজিয়া ঢাবি থেকে
বাস্তব জীবনে ফিরে আসে। কিন্তু রাজিয়া রাগ করে না। ধাক্কা খাওয়ার অপরাধে নিজেকে
ধিক্কার দিতে দিতে লজ্জায় কুঁকড়ে রাজিয়া সরে
দাঁড়ায়। সে স্বাভাবিক চোখে দেখা ভাগ্যবানদের একটুও হিংসা করে
না। সে সময় রাজিয়ার কই। ওকে যে অনেক লম্বা পথ পারি দিতে হবে।
হোক না সে ধূসর পথ। তাতে কিবা আসে যায়।
eta ki shudhui golpo? naki lekhok erokom kauke chinen?
উত্তরমুছুনThank you sharing the post. I am very enjoying and interested in the post.
উত্তরমুছুনCreator of clipping path