উত্তরাধুনিকতা
সাবিত সারওয়ার
একটি আনিবার্য কবিতার জন্ম হওয়া প্রয়োজন
মহারাজ খোঁজ পাঠালেন মর্ত্যের কবিকুলের কাছে
কবিগুরুর বৃদ্ধ শিষ্যগণ
শীর্ষ পর্যায়ের ডাকলেন- মিটিং
কবিতা তো হতেই হবে; কিন্তু বিষয় হবে কি?
কিংবা ভাষা কোন যুগের-
ফর্ম কি আধুনিক নাকি উত্তরাধুনিক?
কোণ থেকে অপেক্ষাকৃত তরুণ কবি এক
চিৎকাতে ছুঁড়লেন মতামতের ফিরিস্তি তুলে
‘ছন্দের কোন প্রয়োজন নেই
কবিতা হতে পারে গদ্যের গাঁথুনিতেও’
বোদ্ধাগণ পড়লেন বিপাকে
জাত মেরে জাতীয় খেতাব!
খৎরা হোক সেও ভালো
কিন্তু অস্থিত্বকে অস্বীকার করলে কি
কবি হওয়া চলে?
উত্তরাধুনিকতা বলে কথা; চুপ থাকাই ভালো
শিষ্যগরি মন্যবর বললেন-
কবিতা হবে
মানুষের প্রচলিত কবিতা’র মতোই
সহজ এবং সরল শব্দ; ভাষার ঝনঝনানি এবং
দোলনার দুলুনিতে
বিপত্তি উঠলো ঢের-
নিশ্চয়ই গুরুর প্রধান শিষ্য ছড়াতেই
স্বস্তি খোঁজেন
তিনি কবি নন; ছড়াকার।
অনাস্থা উত্থাপিত হলো-
‘উনাকে নিষ্ক্রান্ত্র করা হোক’
বয়সের ভারে তিনি বিকিয়ে গেছেন।
এবার সভার প্রধান সভ্য কবি করা হলো-
উদ্ভ্রান্ত কেশের কাব্য কানাইলালকে
নিশ্চয়ই তিনি প্রাজ্ঞ বটে
তিনি কবিতার প্রচলিত চেহেরা বদলে দিলেন;
ঘোষণা দিলেন-
এ যুগের কবি মানেই এক্সপেরিমেন্টাল পয়েন্ট
সুতারাং উত্তরাধুনিকতাই কবিতার অনিবার্য ক্ষুধা
মহারাজা খবর পেলেন যথাযথ
খুশি হয়ে বৃদ্ধাদের বখশিস পাঠালেন
আর কবিতার চিরকালের প্রতিবাদী শক্তিকে
শেখল পরিয়ে করলেন শৃঙ্খলিত-
অনাগত কালের ক্লীব এক উচ্চারণ হলো কবিতা
সেই থেকে কবিতা বধূর অকাল প্রয়াণ ঘটলো... ।
অনাগত কাল পরে.....
একদিন পরে কবিতার আভিধানিক অর্থ হলো
একজন ভদ্রপাঠককে অপ্রস্তুত করবার
আধুনিক মন্ত্রাস্ত্র...!
কবিতাটি অসাধারণ। বর্তমান সময়ে একজন কবিও যে নিজেদের সমস্যাগুলো বুঝতে পেরেছেন সেজন্য এই বৃদ্ধ কবিকে ধন্যবাদ। তরুণরা যে কবিতা লিখছে তাতে শেকড়কে অস্বীকারের একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এ কবি শেকড় সন্ধানী কবি। কবিকে ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন