ছড়া-আব্দুর রহমান শিপুল

আচানক কথা

আব্দুর রহমান শিপুল


কালুর আছে মস্ত হাতি
মাথায়ে তুলে নাচে
চক্রাকারে খানিক ঘুরিয়ে
আছাড় দিয়ে কাঁচে।
বিড়ি খাওয়া বিড়ালটা তার
বাঘের স্বরে ডাকে
ভদ্র ভাষায় কথা বলে
একটু খানি বেঁকে।
হিরোমার্কা গরুটা
চশমা চোখে দিয়ে
আনতে চায় নায়িকা সে
তারার দেশে গিয়ে।
হাঁসের দল সাথে নিয়ে
মুরগি করে চুরি
জামা-কাপড় কিচ্ছু নেয়
হাতে একটা ঘড়ি।
গাধা-ছাগল কাঁধ মিলিয়ে
পাঠশালাতে যায়
স্যারের গায়ে বমি করে
তিড়িংবিড়িং লাফায়।

কবিতা-অসীমেস রায় এর ২'টি কবিতা

কণ্ঠ ছায়া

অসীমেস রায়


সময় গভীর রাত বারোটা চল্লিশ...

হটাত ঘুম ভাঙ্গা চোখ কার্নিশ...

দেখা মেলে বহুদিন পর......

আজ সে জীবন্ত ভেসে আসা কণ্ঠ ছায়া ঝড়...

আমাকে ভুলে যায়নি এখনো সে,

তুমি জানো এখনো তোমায় ভালোবেসেছি...?

তোমার ক্লান্ত চোখে চেয়ে দেখো এসেছি...

কতদিন নিদ্রাহীন কাটিয়েছ রাত...

তুমি ডাকো নি তাই অভিমানে ধরিনি হাত...

কেমন আছো তুমি ?

যেমন রেখেছো তুমি...

চারিদিক অন্ধকার রাতজাগা কুকুর ডাকছে বেসুরে...

আজ একটিও জোনাকি কাছে নেই, অস্থির অন্ধ বিছানা থেকে দূরে...।।

শুধু সাদা ওড়না উড়িয়ে যেন কালো মেঘের মাঝে কেউ এসেছে...

বলছে পৃথিবী ছেড়েছি অনেকগুলো বছর হয়েছে...

দেখতে এলাম তোমাকে......

তুমি তো ভুলেই গেছো আমাকে...

ভুলিনি এখনো তাই তো শরীর মন ভরেছে জড়তায়...

জানি তুমি ভালো নেই...তাই তো এলাম,

চলো আজ ভেসে যাই কোনও এক গভীরতায়...

তুমি ঘুমিয়ে পরো...

আমি বসে আছি তোমার কাছে...

কেনো এলে আবার তুমি ?

পারবে ফিরে আসতে জীবনের কাছে ?

বেস ! জাচ্ছি চলে আসবো না আর ভুলে যাবো মায়া......

হ্যা ! তাই যাও...এসেছো তো হয়ে সেই মৃত কণ্ঠ ছায়া...




কিছুই নেই

অসীমেস রায়


অভাবের যেন বোধগম্ম্য টুকু নেই...

সব কিছু থেকেও যেন কিছুই নেই...

কখনো হাঁটতে হাঁটতে বহুদূর চলেছিলাম...

সময়কে কিছুতেই ধরতে না পেলাম...

অন্ধকারে গুমরে কাঁদতে থাকা জীবন সেই...

পেয়েছিলাম তাকে,কই সে তো আজ নেই...

হাওড়া ব্রিজে দাড়িয়ে তাকিয়ে গঙ্গার দিকে...

বোকার মত প্রশ্ন করলাম,

কেন পারিস না ? তাকে ফিরিয়ে দিতে...

আমার কথা না হয় ছেরেই দিলাম...

আর ওরা! ওরা কি দোষ করেছে ?

ওরা গরীব!, অনাথ, ফুটপাত বলে তাই ?

একটু অন্ন সেই পরশু জুটেছে.........

চেয়ে দেখো... ওদের যে কেউ নেই...কেউ নেই......

আমি! আমার তো সব আছে তবু যেন আমি ওদেরই মতো সেই...

চারিদিকে শুধু বিষাদের ছায়া চোখে পরে ......

ওরা হয়ত বেঁচে যেতো...?

আর সে ? সেও তো আজ বহু দূরে...

আজ বড়ই ক্লান্ত...বড়ই ক্লান্ত কিছুই ভাল লাগে না ...

দুঃখের রাত যেন কিছুতেই শেষ হতে চায় না...

অতীতের দুরত্ত অনেক, নতুন কিছুই পাইনি আর...

তবু যেন মাথার চারপাশে কড়া নাড়ে বার বার...

রাত আসে, দিন যায়, রাত আসে আবার সেই......

তবু কি কিছুই পেলাম ? না! কিছুই নেই , কিছুই নেই।।

কবিতা-মেঘলা আকাশ

এক যুবক বলেছিল ভালোবাসি

মেঘলা আকাশ


আজ থেকে বহুবছর আগে এক যুবক বলেছিল ভালোবাসি,
বলেছিল তোমায় দিলাম নীল মেঘে ঢাকা আকাশ,
রোদেলা দিনের বিচিত্র পুস্পের কানন,
সাগরের ঢেউয়ে হৃদয় ভাসিয়ে হারিয়ে যাব দুজন,
আজ থেকে বহুবছর আগে এক যুবক বলেছিল ভালোবাসি.....

বলেছিল তোমায় দিলাম গানের সুরের ভোলা রাতের প্রহরের নীল নক্ষত্র,
জোছনা জাগানো নিশিথে প্রদীপ জ্বলা মেঠো পথের জোনাকি,
আজ থেকে বহুবছর আগে এক যুবক বলেছিল ভালোবাসি.....

ভালোবাসার সেই গল্পটা মাঝে মাঝে মনে পড়ে যায়,
খুবই কম,তারপর মনে পড়ে যায় হঠাত্হঠাত্ বলেছিল তুমি কি হবে সেই স্বপ্নকুমারী,
সজল ধারার এই জোছনাময় চারিদিকে,
যার স্পর্শের মায়াজালে জাগে শীতল শিহরণ,
চাঁদের সাথে হবে একান্তে কিছু কথোপকথন,
হালকা হাওয়া ছুঁয়ে প্রদীপ শিখা জ্বলে,
হাতে হাত রেখে দুজনে দাড়িয়ে,
হারিয়ে যাব কোন এক সময় অসীম সীমাহীন সময়ের গহীনে,
আজ থেকে বহুবছর আগে এক যুবক বলেছিল ভালোবাসি,
অযথাই বলেছিল,দিয়েছিল রূপকথার গল্পকথা,
এক যুবক বলেছিল ভালোবাসি..................