কবিতা-শামীম পারভেজ

স্বাগতম হে বৈশাখ 

-শামীম পারভেজ 


বৈশাখ আসে -
রেগে ধেয়ে হাওয়ায় ভেসে তীব্র গতিতে
মায়াহীন মমতাহীন চেহারায় 
লন্ড ভন্ড করে ওলটে পালটে দেয় চারদিক
তার নয়ন অশ্রু জলে পরিষ্কার করে ধূলো বালি ময়লা
দূর হয় অতীতের দুঃখ কষ্ট বেদনা যন্ত্রণাগুলো 
তারপর হয় শান্ত  

বৈশাখ আসে -
তুলির আঁচড়ে আঁকা আলপনার কল্পনাতে
যাত্রা শুরু হয় ভবিষ্যতের রঙ্গিন স্বপ্ন নিয়ে
বেজে উঠে একতারার সুর 
বেজে উঠে ঢোল 
ভেসে আসে বাউলের গান 
আনন্দ উল্লাসে জেগে উঠে শিশু কিশোর জনগণ
চলে পান্তায় ইলিশ, শুটকী ভর্তা খাওয়ার উৎসব।

এসো হে বৈশাখ এসো -
রঙ্গিন বেলুন আর শান্তির পায়রা নিয়ে 
এসো আলিঙ্গন করি 
দৃঢ় ভাবে জাপটে ধরি
সুখের স্বপ্ন গড়ি 
সব কন্টক বাধা দূর হয়ে যাক 
স্বাগতম স্বাগতম এসো হে বৈশাখ

কবিতা-ফেরদৌস জামান

কবিতা

ফেরদৌস জামান

                               অন্ধকার আরও ঝেঁকে বসো। কেননা চোখ মেললে এখনো আবছা আলো দেখতে পাই। সে আবছা আলোয় ঘরের সিলিঙ দেখতে পাই।
আমি যেমনটা ভেবে রেখেছি। একদিন সিলিঙ থেকে ঝুলে পড়বো। সবকিছুই ঠিক করা আছে। কেবল সুইসাইড্ নোটটাই বাকী। কিছুতেই কিছু লিখে উঠতে পারছি না।

অথচ বেঁচে থাকার জন্যে কয়েকটি শব্দের একটি বাক্য একটি কারণই যথেষ্ট

রাজহংসী তুমি যে পুকুরে নাইতে নামো তার পাড়ে বড় গাছটার মগডালে এক ডানা ভাঙা ঘুঘু থাকে। ডানা ভেঙে যাওয়ার পর সেও মরে যেতে চেয়ছিল।

কিন্তু সুইসাইড্ নোট লেখা ছিলনা বলে আমি তাকে মরতে দেই নি। খাতা আর কলম দিয়ে তাকে রেখে এসেছিলাম গাছের মগডালে। আগে সুইসাইড্ নোট তারপর সুইসাইড্

তারপর অনেকদিন পর একদিন ভর দুপুরে মুখোমুখি হই বড় গাছটার। আমাকে দেখে মুচকি হাসে ঘুঘু। সুইসাইড্ নোট লিখার খাতা ভর্তি কবিতা আর কবিতা! কথোপকথনের এক পর্যায়ে সে বললো, কবিতা নাকি তাকে বাঁচতে শিখিয়েছে। শুনে আমি অবাক হই! কবিতাও বাঁচতে শেখায়!

রাজহংসী রোজ বিকেলে যখন তুমি উড়ে বেড়াও তখন আমি কবিতা পড়তে যাই। ঘুঘু কবিতা লিখে আর বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। কিছু কবিতা মেঘে মেঘে উড়ে বেড়ায় বৃষ্টিতে ছড়াতে। রাজহংসী তোমার প্রিয় বৃষ্টি।

আর কিছু কবিতা তোলে নিয়ে আমি ঘরে ফিরি।
আমি খুঁজে পাই বেঁচে থাকার জন্যে তিন শব্দের একটি বাক্য একটি কারণ- কবিতা

কবিতা-রাশেদুল হাসান

আস্তাকুড়

রাশেদুল হাসান


তোমার স্কালে নেই জীবন্ত মস্তিষ্ক।

আছে জমাট বাধা অন্ধকার,

আর ক্ষুধার্ত নেকড়ের হাহাকার!

ক্ষমতার দম্ভে হারিয়েছ চোখ,

হয়েছ বধির।

তুমি নষ্ট। তুমি ধ্বংস। আস্তাকুড়ের বর্জ্য।

নরক দোযখ, যাই বল তুমি, তোমার জন্য ধার্য।



আচ্ছা আমি তোমাকে কেন গাল মন্দ করছি?

আমি তো তোমার প্রতিবিম্ব।

যত ক্ষুদ্রই হোক,

ক্ষমতার লড়াই তো আমিও করছি।

গান্ধীর তিন বাদরের মত,

 
শুনেও শুনছি না,

দেখেও দেখছি না,

বসে আছি জ্বিবহীন লালা সর্বস্ব মুখ নিয়ে।

চেটে দিচ্ছি তোমার জুতো।



আমি, আমরা তোমাদের অকারনেই গাল দেই।

অথচ নিজের জন্য নরক আমি নিজেই করেছি ধার্য।



আমি নষ্ট। আমি তোমারই মত আস্তাকুড়ের বর্জ্য।