কবিতা-রাশেদুল হাসান

অসমাপ্ত ভাবনা গুচ্ছ-২৩

রাশেদুল হাসান



অগ্নি শিখার দ্যুতিতে নয়, 
উত্তাপে জীবন চাই। 
সূর্যের আলোতে নয়। 
হাইদ্রোজেনের ভাঙ্গনে নির্গত শক্তি, হয়ে বাচতে চাই


তোমার জন্য কবিতা কিংবা
শব্দ সাজিয়েছিলাম
তখনও বুঝিনি লাভার কালিতে
লিখা শব্দ তোমার জন্য নয়
স্রেফ অপচয়
সে শুধু শীলা খন্ডে দ্রোহের জন্য সয়
মরুর বুকে ক্যাকটাস হয়
গোলাপের ভালবাসা নয়

কবিতা-কালপুরুষ

পর্দাগুলো নীল

কালপুরুষ


এই বিদায়ের পর-
আমরা কারও মুখ মনে রাখব না,
প্রতিজ্ঞা করলাম। \"এটা উদযাপন করা যাক\"
বললাম। সানন্দে রাজি হল সে।

সান্ধ্য আঁধার
চমৎকার।
১৪১ তম এবং শেষ যৌথ ভ্রমণ
প্রিয় রেস্তোরাঁ
পরিচিত চেয়ার
অপরিচিত মুখ
দেয়ালে \"জন ডন\" রোম্যান্টিক কবি।
পর্দাগুলো নীল কাঁপছে।
গোল্ড ফ্লেক ঠোঁটে আমি গল্প করছি
ধোঁয়া কফি হাতে আমরা গল্প করছি
কোন দুঃখবোধ নেই স্বাভাবিক যেন পিকাসোর
\"
দ্যা আর্টস অফ লাইফ\"

\"
রাত জেগনা, ঠিকঠাক খেয়ো, টিকটিকি
আর কবিতা নিয়ে বেশি ভেবনা। এসব বোকাদের কাজ\"- বলল।
\"
শুনেছি ওখানে দারুণ শীত; তুমি ভালো থেকো\"
আমি বললাম।
এরপর শ্মশানের নিস্তব্ধতা, ভৌতিক হাওয়া দিচ্ছে
উত্তরের জানালা জেনে গেছে বিদায় !
একটা মাছি এসে জানান দিল কফিদের শীতকাল।

পর্দাটা নীল কাঁপছে।
চোখে তাকালাম
উজ্জ্বল দৃশ্য এক গত জন্মের ভুলে যাওয়া পাপ
হাত স্থির হল হাতে।

বিদায় ভুলে গেল আমাদের নির্ভুল ওষ্ঠ

কবিতা-রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ

পাথর

রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ


প্রবচন নিয়ে নিকোনো সন্ধ্যা
হুইসেল বাজছে পাখিদের সীমান্তে

শালবনে জবুথবু , অস্ফুট দিন
শূন্যে বুনা হল প্রাইভেট মিউজিক

নেশাতুর সাইকেলে ক্রমশ শীৎকার
গল্প শেষে ভিন্নবিষযক জিজ্ঞাসায়
পাথর ফাটছে নাভিতে

কবিতা-শর্মিষ্ঠা ঘোষ

এর জন্যই

শর্মিষ্ঠা ঘোষ 


এর জন্যই ' বিশেষ ' তুমি
এর জন্যই কাছে আসার হাজার অজুহাত
এর জন্যই ভাঙল শপথ
'
ভুল করেও ভাবতে চাইনা ' ভাবছি যতবার

এর জন্যই ফুল কুড়িয়ে বেলা
এর জন্যই পদ্য গদ্য রেলা
এর জন্যই মন ক্যামেরায় ক্লিক
কাবাব খাচ্ছি স্বপনের টুথপিক

এর জন্যই ঠিক বারোটায় ভোঁ
মগজ শানায় অসহ্য সাইরেন
এর জন্যই অসম্ভবের শেষ
মুখ থুবড়ে পড়ছে যত ক্লিশে।

কবিতা-কানিজ ফাতেমা খুশি

বাবা

কানিজ ফাতেমা খুশি


মৃত্যুর জরাজীর্ণ আওয়াজ ,
আমার কানে আসে
প্রতিনিয়ত ঘুরি আমি, তোমারই
স্নেহের অনুভুতির ভেতর
বিষণ্ণতায় যায় আমার অন্তর

খুঁজে ফিরি বাবা, তোমার
হাতের স্পর্শ, চোখের ইশারায়,
কাছে ডাকা, ধারাপাতের বর্ণনা,
নিত্য ভুল করা, তোমাকে বিরক্ত
করা, বই ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে, হারিয়ে
ফেলেছি বলা
কি শান্ত সৌম্য তোমার বদনখানি
ভুলেও দেখিনি রাগ , শুনিনি
এটা করেছো কেন কখনো বলতে

মনে আছে বাবা,
হাঁটবার দিনের কথা ?
ভারি অন্যায় করেছিলাম সেদিন,
জানি ক্ষমা করেছো তখনই
ফিরে এসে ঘরে না ঢুকেই,
মাকে বলেছিলে,
আমার রাগিলা মা কোথায় ?
খুঁজে পেয়ে,
আদরে আটখান করে,
কোলে তুলে নিয়েছিলে বলেছিলে
আগামী দিন আর এমনটি হবে না
হয়ওনি, দিয়েছো কোনো কথা না বলেই

বাবা, তোমাকে খুঁজে ফিরি এখনো,
যেন আমার পিছনেই
তুমি দাঁড়িয়ে,
মাথায় স্নেহের হাতটি রেখে
স্থির রয়েছো চেয়ে

ফিরে এসো বাবা মৃত্যুর আবরণ ফেলে
কোলে তুলে নাও আবার
আগে যেমন নিতে ,
নিখাদ ভালোবেসে

ছড়া-মনসুর আজিজ এর ২টি প্রেমের ছড়া

প্রেমের ছড়া

মনসুর আজিজ


. হীরা


হীরা 
তোমায় দিলাম 
আল্লাহ খোদার কিরা
আর যেও না ওই ছেলেটার কাছে
ডজন ডজন ধাড়ি মেয়ে ঘুরছে তারই পাছে
স্বভাব? 
তার কিছুটার অভাব

এই ধরো সে একলা পেলে কারে
গোফটাও সে নাড়ে
এক পলকে চোখ করে পিটপিট
এর নিচে হ্রস্ব উকার মস্ত বড়ো কীট

কদিন আগে দিঘির পাড়ে
দুজন ছিলো ঝোপের আড়ে
আমরা কজন তার ফাটালাম গিরা
হীরা 
তোমায় দিলাম 
আল্লাহ খোদার কিরা।




. দীনা


দীনা 
বাজাও তোমার বীণা
আমার কণ্ঠে উতল প্রেমের সুর
যে দেখো ঢেউ তোলে কদ্দুর
উতল হাওয়ায় খোলো তোমার খোপা
আমি হবো ধোপা
মন্থনে মোর কৃষ্ণ কেশের রাশি
জল খসাবে দিঘির জলে ভাসি
ভাসবে বলো কি না?
দীনা!
বাজাও এবার 
তাক ধিনা ধিন ধিনা
উঠলো তুফান দিঘির জলে
আমার গানের মন্ত্র বলে
ঢেউয়ের পরে ঢেউ ভেঙে যায়
পাড়ে
যারে
মন সপিলাম হৃদয়পুরে
এখান থেকে অনেক দূরে
বলো, 
সেই তুমি সেই কি না?
দীনা