যৌবনের প্রেয়সী কবিতা
শ্যামল সোম
কবিতা তোমায় দিলাম ছুটি
বহুকাল আগে লেখা হয়েছে,
তারপরেও কেটে গেছে বহুকাল,
কালের অতলে, ফতোয়ায়
চোখ রাঙানিতেও,
কবিতা তুমি কোথাও হারিয়ে যাও নি-।
আমার বড় আদরের কবিতা
তোমাকে বুকের মাঝে আমি আজও
গোপনে লুকিয়ে রেখেছি।
আরও গভীরে বহু কাল ধরে যতনে,
আমৃত্যু কবিতা তোমার সাথেই সহবাস,
কবিতা শব্দে চুম্বন, সম্ভোগে উষ্ণতা
কবিতা তোমার ছন্দে ছন্দে আনন্দ।
এই আনন্দটুকু, নিয়ে যাওয়া সময় এলো,
এবার আমার পালা শেষ।
এখন নবীন কবির সাথে প্রেমের-
সুখে, পরশে শিহরণে- হৃদয়ে স্পর্শ !
আমার যাওয়ার আছে তাড়া--,
শেষ বিদায় ক্ষণে, প্রেমের চিহ্ন একটি রক্ত গোলাপ।
এই মেয়ে তোর নিজের বাড়ি কৈ?
শ্যামল সোম
ছোট মেয়েবেলায় বাপের বাড়ি,
সায়না হলে শ্বশুর বাড়ি,
ছোট বেলায় মা মরলে মামার বাড়ি,
বর গেলে ছেলের বাড়ি।
স্বামীর সাজানো ফ্ল্যাটে,
তোর পছন্দের বাহারী দেওয়াল ঘড়ি।
রাত বাড়ছে, রাত বাড়ছে,
বরের অপেক্ষায় কাটছে নির্জন নিশীত রাত,
রাত, রাত রাড়লেই ভয়ে ভয়ে
গুটি গুটি পায়ে সোহাগী! স্বামীর
খোঁজে, তুই এলি বড় রাস্তায়।
সেই সোয়ামী তালাক দিলে, মেরে
তাড়িয়ে দিলে -কিংবা কেরসিন ঢেলে
পুড়িয়ে দিলে, আধ পোড়
শরীর নিয়ে ফিরবি কোথায় ?
আবার সেই বাপের বাড়ি, দাদার বাড়ি,
দাদার বউর মুখ ঝামটা আঁকা বেঁকা কথা;
কেবল কথার ফুল ঝুড়ি।
ফের করেছিস বরের সাথে আড়ি,
তোকে বলিহারী ! এই যে এখন
ঝোঁকে মাথায় ছাড়া ছাড়ি,
যাবি কোথায় সেই সে প্রেমিকের বাড়ি,
হায়রে পোড়া কপালী,
এই তো মেয়ে মানুষের জীবন,
যার হাত ধরে
ঘর ছাড়লি -বাড়ি ছেড়ে পালালি,
ভালো দাঁও পেয়ে সে-ই তোকে বেঁচে দিলো,
এখন গতর ভাঙ্গিয়ে বহাল তবিয়াতেই
আছিস হাড়কাটা গলির
বাড়িওয়ালীর মাসীর বাড়ি।
এভাবে অনেক বছরই তো হলো
এই পরের বাড়ি পড়ে থাকা,
হাতে পায়ে ধরে,
শরীরের ধকল সহে; ওমা
এভাবে আর কত দিন থাকবি?
এই মেয়ে তুই ভালো করে পড়,
ভালো রেজাল্ট কর, পরে চাকরী করবি,
গাড়ি কিনবি এবার তুই নিজের পায়ে দাঁড়া।
ওমা তুই এবার নিজের, নিজের বাড়ি গড়;
বা ড়ি সাথে লাগোয়া বাগানে ঐদেখ
কেমন ফুল ফুটে তোর বাগানে।
স্বপ্ন ভাসে জলে
শ্যামল সোম
নদীর পারে গতকাল রাতে
ঘন মেঘের আড়ালে ছিলো মরাচাঁদ,
প্রচন্ড ঝড়ের ভয়াবহ দাপটে বৃষ্ঠি নাজেহাল,
মেঘের বজ্রনিনাদ।
বিদ্যুত এর ঝলসানি--
অকস্মাৎ নৈঃশ্বব্দের মাঝে শোনা গেলো,
রাইফেলের গুলির আওয়াজ,
বাসা ছেড়ে উড়ে যায় যত পাখী।
এলো এক বিষন্ন সকাল,
বৃষ্ঠি গেছে থেমে, এখন মেঘলা আকাশ।
স্বপ্ন সন্ধানী পাঁচ যুবকের বেওয়ারিশ
লাশ ঐ ভেসে যায় গঙ্গায়--!
কোন দিনই সনাক্ত করণ হয় নাকো,
এই যে লাশ ভেসে যায়।
দু চোখে ছিল রক্তিম সূর্যোদয়ের
আলোকে বিপ্লবের লাল স্বপ্ন--
ঐ জলে ভাসে কার -কার লাশ
নূতন এক প্রভাতের সন্ধানে।
উদ্ধত যৌবন ডিঙ্গিয়ে পাহাড়,
জলকাদা-- মেখে ভালোবেসে,
দুঃখে অনুভবে, ময়ূরাক্ষীর জল
সিঞ্চিত গাঁয়ে, কংসাবতীর
অভাবের সংসারে, তিস্তার গহণ
অরণ্যে ভালোবেসে মানুষের-
সাথে মাঠে ময়দানে পাশে থেকে -
কাজে ছিলো নিত্য নিয়োজিত।
নতুন এক এক স্বপ্নের বাসনায়,
গভীর অতৃপ্ত আকঙ্খায় লাশ -
ভেসে- যায় - তৃষ্ণার জলে;
চেয়ে দেখ ঐ দূরে, মেঘনা নদীতে আজও
নবীন যুবকেরা লাশ হয়ে চলে ভেসে,
ঐ শুচিস্নিগ্ধ প্রবাহিত জলে।
আমি মুগ্ধ হয়ে যাই আপনাদের অসম্ভাব্য সুন্দর লেখার সংকলনে,দুর্দান্ত সাফল্যের জন্য শুভকামনা রইলো, ধন্যবাদ আপনাকে, আপনাদের।
উত্তরমুছুন