বায়স্কোপ
ওয়ালিনা ওভি
লং শট
একটা ল্যাম্পপোষ্ট, তার পাশে কুন্ডুলী পাঁকিয়ে ধোঁয়া উড়ছে,
একটু প্যান করতেই দেখা গেল মাঝারী গড়নের একটা মেয়ে
উগ্র প্রসাধনে আসল চেহারা ঢাকা পরে গেছে প্রায়, হাতে জ্বলন্ত
সিগারেটে থেকে থেমে থেমে শুষে নিচ্ছে গরম নিকোটিন।
জাম্প শট
একটা হারজিরজিরে ছেলে, স্যাতস্যাতে একটা ঘরে জ্বরের ঘোরে
আবোল তাবোল বকছে।
লং শট
একটা বাপের বয়েসী লোক হাঁটতে হাঁটতে এসে মেয়েটার সামনে
হঠাৎ থেমে গেল, সিগারেট ধরাল, মেয়েটার দিকে তাকাতেই, মেয়েটা
শরীর দুলিয়ে নিঃশব্দে হাসল। তারপর লোকটার পিছু পিছু একটা গলিতে
হারিয়ে গেল।
ক্লোজ শট
গলির পাশ ঘেসে একটা দেয়াল, সেখানে রাজনীতি,
সামনে আসছে শুভ দিন, আপেল মার্কায় ভোট দিন।
গলি থেকে মেয়েটা বেড়িয়ে এলো, হাতে ক’খানা কাগজ,
যার এক পিঠে যমুনা সেতু, অন্য পিঠে জাতীয় স্মৃতিসৌধ,
লেখা আছে, চাহিবা মাত্র দিতে বাধ্য থাকিবে, অনেক’টা
তার শরীরের মতন।
জুম শট
মেয়েটা ভাবে সন্তানের কথা, শরীর কী ভীষণ গরম ছিল
যখন সে বেরুচ্ছিল, কিন্তু, সে জানে ওই কাগজের উত্তাপ
আরো অনেক বেশী।
পরিশেষে,
এসব নাকি শুধু সিনেমায় হয়!
অভিসম্পাত, অভিশাপ
ওয়ালিনা ওভি
কথিত আছে, 'করিলে অভিসম্পাত ফিরে আসে নিজেরই কপালে '
অভিশাপ ! কেউ কাউকে দেয় কি ? এতো নিয়তির খেলা ।
কখনো আসে গড়িয়ে গড়িয়ে অশ্রু হয়ে, কখনো বা দীর্ঘশ্বাস হয়ে,
একেকটা হাহাকারের আত্মজীবনী কোনদিন প্রকাশিত হয় না ।
বিশ্বাসের গাঁথুনীতে থাকেনা জোড়, তবুও খুব সাবধানে বুকে নিয়ে
দাঁড়াও । একদম নড়বে না, এখানে ঊনিশ-কুড়ি ত্রুটি চলে না ।
গলদে দেবে ধাক্কা, অবশেষে বিভ্রাটের চাপে পড়ে সময়ের মৃত্যু ।
এই যে অনাকাংক্ষিত মৃত্যু, দায়ী কে ? তুমি না নিয়তি ?
সময়ের চতুরকথন সাথে নিয়ে গেলো বিশ্বাস, অনুরাগ হারিয়ে গেল
বিবাদে, আর সব হাসি নিয়ে গেলো আঁধার ।
অবশেষে পূর্ণিমা হেরে গেলো ঘোর অমাবস্যার কাছে, তরল জোছনা
ঠোঁটে করে আর ছুঁইয়ে দেবে না কোন স্বপ্ন মানব ।
চুম্বনে বন্ধ চোখের পাতা হাতড়ে বেড়ায় ভাষা, ঐ চোখ স্বপ্ন দেখে না,
ভুলে গেছে ।
আঁধারের কাব্যে, আঁধারেরই ভাষা বোঝা, চিরতরে আঁধারের হয়ে থাকা
একঘোরে চাঁদ ।
পোড়া চাঁদ, সময়কে ফেরাতে পারোনি তাই ধিক্কার ।
স্বপ্ন টোকাই
ওয়ালিনা ওভি
রঙীন শব্দের পেছনের মানুষগুলো আসলে বর্ণহীন,
অপ্রাপ্তির আনাচে কানাচে খুঁজে ফেরে তৃপ্তির ছাঁচ ।
সব পেতে নেই, সব পেয়ে গেলে মরে যাবে স্বপ্ন,
গোটা জীবনের ওগুলোই তো রঙীন ।
উড়ুক্কু কিছু স্বপ্ন ।
আশার মোহে টেনে নেই নিরাশা,
জীবন খুঁজতে গিয়ে তুলে আনি চোরাবালি ।
নিমজ্জিত স্বপ্নে গড়ি দুঃরাশার বালিঘর,
সময়ের লুকোচুরিতে কেটে যায় অমানিশার ঘোর ।
চুপ দুপুরে সুখ কথার স্বপ্ন গুলো ভুলিয়ে রাখে ব্যর্থতা,
এপাশ-ওপাশ মধ্যরাতের ভোরের স্বপ্নের মতো ।
আমরা স্বপ্ন টোকাই ।
অপ্রাপ্তির আনাচে কানাচে খুঁজে ফেরে তৃপ্তির ছাঁচ ।
সব পেতে নেই, সব পেয়ে গেলে মরে যাবে স্বপ্ন,
গোটা জীবনের ওগুলোই তো রঙীন ।
উড়ুক্কু কিছু স্বপ্ন ।
আশার মোহে টেনে নেই নিরাশা,
জীবন খুঁজতে গিয়ে তুলে আনি চোরাবালি ।
নিমজ্জিত স্বপ্নে গড়ি দুঃরাশার বালিঘর,
সময়ের লুকোচুরিতে কেটে যায় অমানিশার ঘোর ।
চুপ দুপুরে সুখ কথার স্বপ্ন গুলো ভুলিয়ে রাখে ব্যর্থতা,
এপাশ-ওপাশ মধ্যরাতের ভোরের স্বপ্নের মতো ।
আমরা স্বপ্ন টোকাই ।
স্বপ্ন টোকাই কবিতাটা বেশ ভালো লাগলো...
উত্তরমুছুন