কবিতা-চন্দনকৃষ্ণ পাল

স্বপ্নযাত্রা-

চন্দনকৃষ্ণ পাল


প্রবল দেবত্ব নিয়ে জন্ম গ্রহণ
নর্দমার স্রোত নিয়ে হাঁটা চলা করে যে মানুষ
তার মনে পুষ্পোদ্যান করি আর
সাত রঙে আঁকি এক বিমূর্ত ছবি।

স্থির চোখ তাবৎ শিল্পীর
পূন্যধারা রেখে যাই মধু পূর্ণিমায়
আজকাল দেবত্বে ভাসাচ্ছি পৃথিবী
মানুষের মতো আর সুখী কেউ নেই।

কবিতা-পার্থ ঘোষ এর ২'টি কবিতা

মিনির জন্মকাহিনী

পার্থ ঘোষ


১৪ই জুন
ছোটো এক পরিবারে,
হইচই শোনা গেল,
জন্ম নিল সোনা মেয়ে।

কানে কানে ছড়াল খবর,
ভরে উঠল নীড়,
এই মেয়ে দুষ্প্রাপ্য,
দেখার জন্য ভিড়।

বাবা বলে আমার মত,
মা বলে "না",
ঘুম ভাঙা শিশু বলে,
চেঁচানো চলবেনা।

আমার মতো আমি
নাম রাখব মিনি,
যা চাইব তাই যেন,
পেয়ে যায় তক্ষুনি। 

শাসন করলে,জোর করলে,
পড়বোনা, খাবোনা,
সবাই যেন ব্যস্ত থাকে,
যখন থামবেনা আমার কান্না।

বাবা,মা ভাবতে থাকে,
বড্ড পাকাপোক্ত এই মেয়ে
আমাদের অসুবিধা,
একাই নেবে সামলে।।




তাকেই দিলিনা

পার্থ ঘোষ 


যার সাথে মিলেমিশে,
শিখলি ভালোবাসা,
উপহার দিলি তারে,
আঘাত করার ভাষা।

যার কাছে যত্ন নিলি,
সকাল, সন্ধাবেলা,
পরিবর্তে করলি তাকে,
শুধুই অবহেলা।

কথা বেড়ে,বেড়ে
গভীর হতো প্র্তিদিন,
তখন ছিলি, অবুঝ ছেলে,
ভালোবাসা বুঝিসনি সেদিন।

জাগল যেদিন ভালোবাসা,
চোখে পড়ল অন্য মেয়ে,
বিনা ডাকে, তারই কাছে,
ছুটে গেলি প্রশ্ন নিয়ে।

মন থেকে চাইল যে,
তার মন- দেখলিনা
তার কাছে নিলি শুধু
তাকে কিছু দিলিনা।।

কবিতা-সুমন্ত গোস্বামীর ২'টি কবিতা

বৃষ্টি দিনের কাব্য

সুমন্ত গোস্বামী


বৃষ্টি ভেজা দিন  কেন জানি না;
আজকে হঠাৎ তোমার কথা মনে পড়ছে;

আজ থেকে বছর কয়েক আগের কথা,
তোমায় আমার খুব ভালোলাগত তখন
শীত গায়ে রোদ মাখার মতো সেই ভালোলাগা

তোমার ঘরের জানলা ধেকে যে পলাশ গাছটা দেখা যায়,
তার মগডালে বাবুইয়ের বাসা আছে; তুমি কি দেখেছ?
তুমি সকাল ঘটতে দেখেছ? কিমবা উঠোন ঘটতে?
যেমন ধরো, তুমি সকালের মিঠে রোদে হাঁটতে বেরিয়েছ;
উঠোন বেয়ে যেই নামতে যাবে, তুমি দেখলে বাগানের
টবটাতে একটা সুন্দর রজনীগন্ধা ফুটে আছে

তুমি ফুল ভালোবাস? আমি বাসি না
আমি উড়তে ভালোবাসি
ধরো আমি ঘুড়ি হয়ে আকাশে উড়ছি, উড়তে উড়তে
হঠাৎ সুতো ছিঁড়ে আমি হাওয়ার টানে বয়ে চললুম
তারপর একদিন; হাওয়ার  কী সব খেয়াল চাপল ;
আমাকে ছেড়ে কোথায়  যেন চলে গেল! আর আমি
অভিকর্ষের সব সূত্র মানতে মানতে নীচে এসে পড়লুম
নেমেই দেখি তুমি আমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে

তুমি কী ভালোবাসো বলবে কি?

সবুজ ঘাসের উপর শিশির পড়তে দেখেছি;
শত নক্ষত্র আর নিহারিকার সৌন্দর্য তোমাকে
এনে দিতে ইচ্ছে হত
তোমার মধ্যে আমি শত রামধনুকে খুঁজে পেতাম

এখন তোমাকেই খুঁজে পেতে কষ্ট হয়, মনের মধ্যে।।





মৃত স্বপ্নেরা

সুমন্ত গোস্বামী


> মৃত স্বপ্নের কোলাহলে কাটে বেলা
>
উদাস বিকেল অনুভূতহীন সুর,
>
আবলুস কাঠে মেয়েলি রোদের খেলা
>
আবহমানের হতাশায় ভরপুর
>
>
একলা শরৎ মৃদু মন্দুর হাওয়া
>
চুপি চুপি ফেরে কাশের সারনী বেয়ে,
>
তোমার জন্যে অযথাই পথ চাওয়া
>
এখন তুমি কোথায় থাকো মেয়ে
>
>
স্বপ্ন যখন ঘুমের প্রাচীর বেয়ে
>
ছড়ায় আমার মনের মরুভূমি,
>
তখন তোমায় নতুন করে ভাবি
>
ভালোবাসার ক্ষেত্রফল বুনি
>
>
রোদ ছড়ায়  তেমনি পাইন গাছে
>
সকাল ঘটে উঠোন জুড়ে আজো,
>
মনে পড়ে সে সব কথা তোমার?
>
তুমি কি আর তেমন করে ভাবো?
>
>
যুবতী তুমি দু: স্বপ্নের মতো
>
অকারনে যেন বসন্ত ঘটে বনে,
>
এর চেয়ে তো কিশোরী  শরৎ ভালো
>
তার আঁচলেও জ্যোৎস্না খেলা করে
>
>
তরুন হৃদয় আবেগের রসায়ন
>
হারিয়ে ফেলেছি জীবনের সেই বেলা,
>
কিশোরী হয়ে আবার তুমি এসো
>
রৌদ্রে তোমায় অপেক্ষায় আছি