ছোটগল্প-বিন আরফান

পড়া মুখস্থ করার টেবলেট আছে!

বিন আরফান


সিলেটের তামাবিল অঞ্চলে বাস করতেন পেঙ্গুইন পরিবার শিশু পেঙ্গুইনের একেতো পড়ায় মন বসত না, অন্য দিকে কিছুতেই পড়া মুখস্থ হতে চাইত না পড়ার কথা শুনলেই তার মাথা ব্যথা করত মা পেঙ্গুইন ভাবেন, ব্যথা রোগের জন্য সে পড়তে পারছে না তাই চিকিৎসকের সরণাপন্ন হন যেহেতু ব্যথা নিত্য দিনের, ঔষধও চলছিল বিরামহীন পেঙ্গুইন টেবলেট খেত আর ভাবত, ব্যথা উপশমের মত যদি পড়া মুখস্থ করার টেবলেট থাকত, তাহলে কতইনা ভাল হত!
যেমন ভাবনা তেমন সমাধান বন্ধু ময়ূরের নিকট জানতে পারেন, পড়া মুখস্থ করার টেবলেট নাকি আছে ময়ূর নাকি ওই জন্যই ভাল ফলাফল করেন
এসংবাদে পেঙ্গুইনের খুশির অন্ত ছিল না কোথায়, কোন ডাক্তারের কাছে গেলে টেবলেটটি পাবেন? জানতে চান
ময়ূর জানান, সেজন্য কুশিয়ারা নদীর তীরে ডলফিনের নিকট যেতে হবে তিনি যাকে পছন্দ করেন তাকেই টেবলেটটি দেন এর জন্য তার মন জয় করতে হয় সেটা ততটা কষ্টের নয়, শুধু ইচ্ছার ব্যাপার, এই আর কি
পেঙ্গুইন খুশি মনে জানান, তিনি তা পারবেন
পরদিন মা বাবাকে না জানিয়ে পেঙ্গুইন ময়ূরের সাথে চলে যান নদীর তীরে সেখানে ডিগবাজি খেলছিলেন ডলফিন ময়ূরকে দেখে ডলফিন জানতে চাইলেন, কিহে বন্ধু, আবার কি অসুখ?
ময়ূর বলেন, আমার নয়, আমার বন্ধুর ওর পড়া মুখস্থ হয় না বন্ধুটি খুব ভাল দিয়ে দাওনা একটি টেবলেট
ডলফিন জানায়, টেবলেট খেয়ে পড়া মুখস্থ থাকলে পেঙ্গুইনকি নিয়মিত পড়তে বসবে?
পেঙ্গুইন ময়ূরের জবাবের পূর্বেই স্বতঃস্ফূর্ত জানান, হ্যাঁ
ডলফিন বলেন, তাহলেতো তোমার কথার পরীক্ষা নেয়া দরকার
পেঙ্গুইন পরীক্ষা দিতে রাজি পরীক্ষা স্বরুপ চার ঘন্টা পড়ার শর্ত দিয়ে পরের দিন পেঙ্গুইনকে আসতে বললেন
যতই মাথা ব্যথা করুক, পড়া মুখস্থ করার টেবলেট পেঙ্গুইনের চাই- চাই তিনি বাসায় গিয়ে এক ঘন্টা পড়েন, এক ঘন্টা খেলেন এভাবে চার ঘন্টা পড়ে পরদিন এলেন
ডলফিন পেঙ্গুইনের এরুপ কথায় বিশ্বাসী হলেন না কেননা পেঙ্গুইন কী পড়েছিলেন ? বলতে পারলেন না বিধায় তাকে আরো একদিন সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়
সেদিনও পেঙ্গুইন পড়া মুখস্থ করতে না পারায় শেষ সুযোগ দেয়া হল অন্যথায় কিছুতেই টেবলেট দেয়া হবে না
শেষ সুযোগ! চার ঘন্টায় পড়া মুখস্থ না হলে টেবলেট হাত ছাড়া হয়ে যাবে মনযোগ দিয়ে চার ঘন্টা পড়লেন নাহ! পড়া মুখস্থ হল না পেঙ্গুইন দুই ঘন্টা বাড়িয়ে পড়লে ডলফিন টের পাবে না এউ ভেবে ছয় ঘন্টা পড়লেন বাহ! পড়া তোতা পাখির মত মুখস্থ হয়ে গেল পেঙ্গুইন খুব আনন্দিত ততটা উড়তে না পারলেও দূর আকাশে উড়তে ইচ্ছে হচ্ছিল পিছন দিকে লাফাতে লাফাতে গেলেন ডলফিলের কাছে জড়তা মুক্তভাবে পড়া মুখস্থ বললেন আর টেবলেট চাইলেন
ডলফিন জানান, তিন দিনের সাধনায় তুমি মাত্র ছোট্ট্র একটি টেবলেট পাবে এতে বেশিদিন কাজ করবে না আর টেবলেট একটির বেশি কাজেও আসে না তারচেয়ে ভাল, তুমি এভাবে পাঁচ বছর কষ্ট করে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষাটা দিয়ে এসো, তখন বড় ক্লাশে থাকবে, পড়ার চাপও বেশি থাকবে সেদিন বিশাল এক টেবলেট দেব তারপর জীবনে আর পড়ায় মনযোগ হারাবে না এমনকি এক পলকেই পড়া মুখস্থ হয়ে যাবে দেখবে যত পড়বে ততই আনন্দ পাচ্ছ 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন